সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া ১৫৫ জন বাংলাদেশিকে বুধবার দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। পতাকা বেঠকের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়। এ নিয়ে মোট ৩৪২ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হলো।
সাগরে ভাসমান অবস্থায় মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া ১৫৫ জন বাংলাদেশিকে বুধবার দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। পতাকা বেঠকের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়। এ নিয়ে মোট ৩৪২ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হলো।
১৭ বিজিবি-র অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, গত ২১শে মে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে সাগরে ভাসমান অবস্থায় ২০৮ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করে মিয়ানমার। এদের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত ১৫০ জনকে ৮ই জুন এবং ৩৭ জনকে ১৯শে জুন দেশে ফেরত আনা হয়। এছাড়া ২৯শে মে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে দেশটির নৌ-বাহিনী আরো ৭২৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাসীকে উদ্ধার করে। এদের মধ্য থেকেই ১৫৫ জনকে ফেরত আনা হয় বুধবার, ২২শে জুলাই। অর্থাৎ এ নিয়ে তিন দফায় মোট ৩৪২ জন নাগরিককে ফেরত এনেছে বাংলাদেশ।
শুধু তাই নয়, মিয়ানমারে থাকা আরো ৩৭৯ জন বাংলাদেশিকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করার কথাও জানান লে. কর্ণেল মো. রবিউল ইসলাম। বলেন, শনাক্তকরণ চূড়ান্ত হলে তাদেরও ফেরত আনা হবে। বলা বাহুল্য, যারা বাংলাদেশের নাগরিক, তাদের অবশ্যই দেশে ফেরত আনবো আমরা।
বুধবার সকাল ১১টার দিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ঘুমধুম জিরো পয়েন্টে দিয়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যান বিজিবির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল। এরপর বেলা ১১টার দিকে শুরু হয় পতাকা বৈঠক। প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তার পর শুরু হয় ১৫৫ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনার কার্যক্রম। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাদের নিয়ে ফেরত আসে বিজিবির প্রতিনিধি দল।
মিয়ানমারের ঢেকিবনিয়া সীমান্তে বিজিপি ক্যাম্পে মিয়ানমার ইসিমগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের সাথে বিজিবির পতাকা বৈঠক অনুষ্টিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ১৭ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. রবিউল ইসলাম। মিয়ানমারের পক্ষে নেতৃত্ব মিয়ানমার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের পরিচালক চ. নারিং।
সীমান্ত এলাকায় উপস্থিত থেকে ১৫৫ জন বাংলাদেশিকে বুঝে নেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমদ। সেখান থেকে কক্সবাজার জেলা পুলিশ তাদের নিয়ে যায় কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে। পরে তাদের বক্তব্য এবং বিস্তারিত লিখে নিয়ে তাদের সমস্ত দায়িত্ব দেয়া হয় আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থাকে।
ফিরে আসা ১৫৫ জনের মধ্যে বাংলাদেশের ১৪টি জেলার নাগরিক রয়েছেন। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের ৪১, ঝিনাইদহের ১২, মাদারীপুরের ১৫, কুষ্টিয়ার ৪, মাগুরার ৪, পাবনার ১২, যশোরের ৯, সিরাজগঞ্জের ২৪, চুয়াডাঙ্গার ১১, কুমিল্লার ৫, জয়পুর হাটের ৪, সুনামগঞ্জের ৮, সাতক্ষিরার ২ এবং ফরিদপুরের ৪ জন বাসিন্দা রয়েছে বলে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কান্তি নাথ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এইসব বাংলাদেশি নাগরিককে সমুদ্রপথে পাচার করা হচ্ছিল। উদ্ধারকৃতরা জানিয়েছেন, তাদের চাকরির কথা বলে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে নেয়া হচ্ছিল। তাদের কাছ থেকে জন প্রতি ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকাও নিয়েছে দালালরা।
তিনি আরো বলেন, পাচারের রুট কক্সবাজার হলেও সারাদেশ থেকে দালালরা এদের চাকরির কথা বলে নিয়ে আসে। এমন দালালদের নেটওয়ার্ক সারাদেশেই রয়েছে।
তবে শুধু বাংলাদেশিদের নয়, মিয়ানমারের নাগরিকদেরও তাদের দেশে পাঠানো হয়েছে। ১৭ বিজিবির উপ-অধিনায়ক ইমরান উল্লাহ সরকার জানান, গত মে মাসে ৪৫৩ জন মিয়ানমারের নাগরিককে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তাছাড়া কক্সবাজারের উখিয়ায় বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ইমরান উল্লাহ। তার কথায়, জুন-জুলাই মাসেও কমপক্ষে ১০ জন মিয়ানমারের নাগরিককে অনুপ্রবেশের সময় ফেরত পাঠানো হয়েছে। (ডয়চে ভেলে)
লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।
লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।
0 Reviews:
Post Your Review