সাতক্ষীরায় শিশু নির্যাতনের ছবি সাজানো

সিলেটের শিশু রাজনের মর্মান্তিক ঘটনাকে পুঁজি করে
শিশুদের ব্যবহার করে পুর্ব বিরোধের সুবিধা আদায় করতে ‘সাজানো ঘটনা’র মাধ্যমে তোলা হয়েছিলো সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ‘নির্যাতিত’ দুই শিশুর ছবি। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বরাতে সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মোদাচ্ছের হোসেন।

তার দাবি ‘ঘটনার তিন দিন পর ভিন্ন স্থান থেকে তোলা হয়েছে ছবিটি। যে ঘটনা সাজানো হয়েছে তার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ।’ এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।

সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শ্যামনগরের কাশিমাড়ি ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের তিন সহোদর গোলাম মোস্তফা, আব্দুল কুদ্দুস ও আবু মুসার মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ দীর্ঘ দিনের।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুস সাত্তার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গোলাম মোস্তফা শিশু দুটিকে চড় থাপ্পড় দিয়ে বেঁধে রাখার কথা স্বীকার করেছেন। তবে পায়ে শেকল দেয়া এবং পুরো দেহ রশি দিয়ে পেঁচিয়ে নির্যাতন সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।’

পুলিশের জানিয়েছে সম্প্রতি গোলাম মোস্তফা তার বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে লোক চলাচল বন্ধ করতে খেজুর কাঁটার একটি বেড়া দেন। এই বেড়া সরিয়ে সেখানে খেলতে আসে পাড়ার শিশু মো. ইয়াসিন (৮) ও মো. নাসিম (৯)।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গোলাম মোস্তফা ও তার ছেলে গোলাম হোসেন শিশু দুটিকে ধরে বেঁধে রাখেন। কয়েক মিনিট পর তা খুলেও দেন।

খবর পেয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় শিশু দুটির বাবা প্রতিবেশী আবদুল হামিদ ও ইসমাইল হোসেন গোলাম মোস্তফার বাড়িতে হামলা করেন বলেও অভিযোগ আছে।

ঘটনাস্থল শ্যামনগরের কাশিমাড়ি ইউনিয়নের জয়নগর গ্রাম ঘুরে এসে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সাইয়েদ মঞ্জুর আলম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘ছবিতে শিশু দুটিকে যে গাছে বেঁধে রাখা দেখানো হয়েছে সেই গাছটি নির্যাতিত শিশু ইয়াসিনের বাড়ির একটি গাছের।’

এ মামলার প্রধান আসামি গোলাম মোস্তফাকে ইতোমধ্যে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অপর আসামি গোলাম মোস্তফার ছেলে গোলাম হোসেনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক জানিয়েছেন, ‘শিশু নির্যাতনের ঘটনা এবং তার পরবর্তী ছবি সাজিয়ে তা গনমাধ্যমে প্রকাশের ঘটনা- সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারা এসব ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।