পুলিশ সুপারের স্ত্রী হত্যার নেতৃত্বে ছিল লন্ডন আ’লীগের সুশান্ত দাশ - NEW WITH ALWAYES DAILY PROYJON24
SUBTOTAL :
জাতীয়
পুলিশ সুপারের স্ত্রী হত্যার নেতৃত্বে ছিল লন্ডন আ’লীগের সুশান্ত দাশ

পুলিশ সুপারের স্ত্রী হত্যার নেতৃত্বে ছিল লন্ডন আ’লীগের সুশান্ত দাশ

জাতীয়
Short Description:

Product Description


আলোচিত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। তবে মূল আসামী সরকার দলীয় হওয়ায় ধামাচাপা দিতে ঈসরাইলী সম্পৃক্ততার নতুন নাটক
সাজিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
পুলিশ হেডকোয়ার্টারে কর্মরত আলোচিত পুলিশ সুপার ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। রবিবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর জিইসি মোড়ে মোটরসাইকেলে করে এসে তিন সরকার দলীয় সন্ত্রাসী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। 
বাবুল আক্তারের উপর আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী লোকজনের ক্ষোভ অনেক পুরানো। ২০১২ সালেই বাবুল আক্তারকে শিবিরের সাথী দাবি করে তার বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছিল আওয়ামীলীগের অনলাইন এক্টিভিস্ট সুশান্ত দাশ গুপ্ত ও অন্যান্যরা। শেষ পর্যন্ত তার স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করে তার শোধ নিল আওয়ামীলীগ। সুশান্ত দাশ আওয়ামীলীগের সুপরিচিত অনলাইন এক্টিভিস্ট। তার নেতৃত্বেই এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে বলে আওয়ামীলীগ সূত্রেই জানা গেছে।
সুশান্ত দাশ আমার ব্লগে লিখেছেন, ‘‘লন্ডনের এখন রাত তিনটা। হটাত ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় ফেইসবুকে আমাদের ব্লগার আজাদ মাস্টারের একটি নিউজ শেয়ারে মো. বাবুল আকতার এর নাম দেখেই চমকে উঠলাম। আমার এই পোস্টে আমি প্রশ্ন করেছিলাম, ''জানতে ইচ্ছে করছে বাবুল আকতার কি বর্তমানে কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দায়িত্বে আছে কিনা? যদি তাই হয়ে থাকে , তাহলে আরো ভাবতে হবে !!!!''
আজাদ মাস্টারের স্টাটাস সূত্র ধরে খুজতে গিয়ে প্রথম আলোতে নিউজটা পাইলাম। এখন কনফার্ম যে, এই সেই বাবুল আকতার যিনি এখন কক্সবাজারেরই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এর দায়িত্বে আছেন ।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বাবুল আকতার বলছেন, ''গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে রামুর বৌদ্ধমন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও জঙ্গিরা জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। ওই হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে পুলিশ আরাকানি নেতা আবু ছালেহকে গ্রেপ্তার করে। আজ দুপুরে আবু ছালেহকে কক্সবাজারের বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।''
আমার কাছে রামুর কাহিনী এখন একটা লাইনে আসছে মনে হয়। এই বাবুল আকতার তাহলে রামু'র ঘটনার সময় কি কি দায়িত্ব পালন করেছেন সেটা আমার জানার ইচ্ছে আছে এবং আমি আমার লাইনে দেখছি ও ব্যাপারটা। আমরা জানি যে, যে একবার জামাত শিবির সে সারাজীবনই জামাত শিবির!
ব্লগারদের মতামত কি?
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ যারা এই স্টরিতে কিছু বুঝতেছেন না তাদের জন্য বলছি- বর্তমান কক্সবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বাবুল আকতার ছাত্রজীবনে ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজীতে পড়ার সময় ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো এবং আমার পাওয়া তথ্যমতে সে শিবিরের 'সাথী' পর্যায়ের এক্টিভিস্ট ছিলো।’’
… এই সুশান্ত বিভিন্ন সময় ফেসবুকে বাবুল আক্তারকে জামায়াত- শিবির আখ্যা দিয়ে হুমকি দিয়েছে।
সরকার দলীয় অনুসন্ধানী সূত্রগুলো বলছে, সুশান্ত দাশের নেতৃত্বেই বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। 
বাবুল আক্তারের স্ত্রী শালীন পোশাক পড়তেন। হিজাব পরিধান করতেন। মারা যাবার সময় তিনি হিজাব পরিহিত অবস্থাতেই ছিলেন। অর্থাৎ, সুশান্ত দাশের যে সন্দেহ তা সঠিক না হলেও বাবুল আক্তার পরিবার যে ইসলামি মূল্যবোধ ধারণ করে সেটাই মূলত কাল হলো তাদের জন্য। সুশান্ত এ কারণেই এ পরিবারকে টার্গেট করেছিল। একটি মুসলিম প্রধান রাষ্ট্রে পুলিশ সুপারের স্ত্রীকে হত্যা হতে হলো ইসলামি মূল্যবোধ মেনে চলার অজুহাতে।
এছাড়াও, গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে যে, বাবুল আক্তার কেমন ছিলেন। সৎ ও সাহসী পুলিশকে সরকারের যত ভয়।
কেই এই বাবুল আক্তার?

“বিপদে পড়লেই সাধারণ মানুষ দ্বারস্থ হয় তাঁর। সহযোগিতা চায়। বাবুল আক্তার নিরাশ করেন না, বরং সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার বাবুল আক্তার সাহসী এক অফিসার, সুযোগ্য এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা। নানা পদকেও ভূষিত হন তিনি
'হাটহাজারী সার্কেলের দায়িত্ব পালনের সময় একবার শহরে এলাম মোবাইল ফোন মেরামতের জন্য। দোকানদার জানতে চাইলেন, 'আপনি কি পুলিশে চাকরি করেন?' 'হ্যাঁ।' 'কর্মস্থল?' 'হাটহাজারী।' 'বাবুল আক্তারকে চেনেন?' 'হ্যাঁ।' কিছুক্ষণ পর বিল তৈরির সময় দোকানি নাম জানতে চাইলেন। 'বাবুল আক্তার।' বিশ্বাস করতে পারলেন না। আবার জিজ্ঞেস করলেন। নিশ্চিত হওয়ার পর দোকানদার বললেন, 'স্যার, আমি টাকা নেব না, আপনি ভালো মানুষ। আমার এক আত্মীয়ের উপকার করেছিলেন।'
হাটহাজারী থেকে বিদায়ের সময় পুলিশ বিভাগ সুযোগ্য অফিসার বাবুল আক্তারকে একটি স্যুট উপহার দিল। স্যুট তৈরির জন্য টেইলার্সে গেলেন। স্যুট ডেলিভারি নেওয়া হলো না। তড়িঘড়ি চলে যেতে হলো নতুন কর্মস্থল কক্সবাজারে। কিছুদিন পর একটি পার্সেল এলো বাবুল আক্তারের ঠিকানায়। সেটা খুলে অবাক হয়ে দেখলেন, সেই স্যুটের পাশাপাশি আরো একটি স্যুট তাঁকে উপহার দেওয়া হয়েছে। হতবাক বাবুল ফোন করলেন টেইলার্সের মালিককে। তিনি বিনয়ের সঙ্গে বললেন, 'স্যার, আপনি আমাদের এলাকার অনেক উপকার করেছেন। কখনো কিছু করার সুযোগ পাইনি। ভালোবেসে এটা আমরা তৈরি করে পাঠিয়েছি। কিছু মনে করবেন না, এটা আমাদের ভালোবাসা।'
তিনি নিজেও এ ধরনের ভালোবাসার পূজারি। সম্মান করেন সাধারণ মানুষকে। মানুষের আপদে-বিপদে কাছে থাকতে চান। সে জন্যই বিচিত্র সমস্যা নিয়ে সাধারণ মানুষ ছুটে আসে তাঁর কাছে। ২০১২ সালে হাটহাজারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার পদে কর্মরত ছিলেন। সেই সুবাদে হাটহাজারীর বাসিন্দা সরকারি কর্মকর্তা ইমাম হোসেন ছুটে এলেন সিএমপি গোয়েন্দা কার্যালয়ে। ৬ ডিসেম্বর অক্সিজেন মোড় থেকে সিএনজিতে শহরে আসার সময় বায়েজিদ থানা এলাকায় মলমপার্টির খপ্পরে পড়েন ইমাম হোসেন। ছিনতাইকারীরা ছিনিয়ে নেয় তাঁর মোবাইল ফোন, টাকাকড়ি। হয়রানির ভয়ে মামলা না করে পরিচিতজনের পরামর্শে ছুটে যান বাবুল আক্তারের কাছে সহযোগিতার আশায়, ছিনতাইকারীদের ধরতে। তারপর?
কোনো এক বছরের ৭ ডিসেম্বরের ঘটনা। চট্টগ্রাম ইপিজেড থানা এলাকা থেকে অপহৃত হন চাকরিজীবী আবুল কালাম। বাবা বেলায়েত বিশ্বাসের কাছে ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। স্থানীয়দের পরামর্শে ভাই শহীদুল ইসলাম ছুটে আসেন বাবুল আক্তারের কাছে। অপহরণের পুরো বৃত্তান্ত শুনে সঙ্গে সঙ্গে কাজে নেমে পড়লেন বাবুল। অপহরণকারীদের দেওয়া 'বিকাশ' নম্বর নিয়ে জেনে নিলেন সেটি কোথায় ব্যবহার করা হচ্ছে। আরো কিছু তথ্য উদ্ধারের পর ফোন করলেন সেই নম্বরে, 'আমি বাবুল আক্তার বলছি, তোমার নম্বরে ... টাকা পাঠাতে বলা হয়েছে। আমি তোমার অবস্থান দেখতে পাচ্ছি। তুমি ওদের বলো কামালকে ছেড়ে দিতে। না হলে আমি আসছি। ওদের সঙ্গে তুমিও জেলে যাবে।' অপহরণকারীরা এ কথা শুনে কালামকে ছেড়ে দেয়। ঝুটঝামেলা ছাড়াই ভাইকে ফিরে পায় ভাই, ছেলেকে ফিরে পান বাবা।
এমন নানা মুশকিলের যিনি আসান করেন, সেই বাবুল আক্তার পুলিশে যোগ দেন ২০০৫ সালে। সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ শেষে র্যাব-২-এ কর্মজীবন শুরু। যোগদানের পরের বছর পুলিশ কর্মকর্তা পুরান ঢাকা থেকে নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ হাজার জাল সনদ, সনদ তৈরির কারখানা এবং এই অপকর্মের দুই হোতাকে আটক করেন।
২০০৭ সালে স্বেচ্ছায় কাঁধে তুলে নিলেন 'ভয়ংকর' ছয় খুনের রহস্য উন্মোচনের দায়। নরসিংদীর ভেলানগরে সে বছরের ১৮ মে ভয়ংকর ঘটনাটি ঘটে। একই পরিবারের ছয় সদস্যকে খুন করে ঘরের ভেতরেই লাশগুলো বস্তাভর্তি করে রাখা হয়েছিল চার দিন। ঘটনার তদন্তের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি চান র্যাব অফিসার বাবুল। অনুমতি পাওয়ার পর শুরু হয় বাবুলের অভিযান। ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব ঘুরে গ্রেপ্তার করেন বীরুকে। তার সূত্র ধরে পুরো হত্যারহস্য উন্মোচন করে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। মামলার বিচার শেষে আসামিদের ফাঁসির রায় দেন আদালত।
এ ছাড়া স্কুলশিক্ষিকা তানিয়া হত্যারহস্য উদ্ঘাটন; ১৪ বছরের কিশোর জাভেদকে অহরণকারীদের হাত থেকে অক্ষত উদ্ধার ও অপহরণরহস্য উদ্ঘাটন; গৃহকর্মী রুমাকে হত্যার পর পুড়িয়ে সব আলামত নষ্টের পরও সূত্রহীন সেই হত্যাকাণ্ডের সূত্র উদ্ঘাটন করে আসামিদের গ্রেপ্তার; রাউজানের বেসরকারি ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৩৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা চুরির হোতা গ্র্যাজুয়েট চোরচক্রকে গ্রেপ্তার; চট্টগ্রামের ভয়ংকর ডাকাত সর্দার খলিলকে ৯ সহযোগীসহ গ্রেপ্তার ও মালামাল উদ্ধার, অজ্ঞান-মলমপার্টি-মোটরসাইকেল চোরচক্র গ্রেপ্তার, ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় রকেট লঞ্চার, ছয় অস্ত্র ও বিপুল গোলাবারুদ উদ্ধার, দুর্ধর্ষ ক্যাডার বিধান বড়ুয়ার কাছ থেকে জি-থ্রি রাইফেল উদ্ধার; চট্টগ্রামের কাদের ডাকাত ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলার ত্রাস কিলার ওসমানকে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করেছেন বাবুল আক্তার। সিএমপিতে যোগ দিয়েই সর্বশেষ পুলিশ মার্ডার মামলার আসামি গ্রেপ্তার ও খুনের কাজে ব্যবহৃত 'কাটনি' উদ্ধার করে দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। আর এসব সাফল্যের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে পেয়েছেন স্বীকৃতি- রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক পিপিএম (সেবা) (২০০৮), ২০০৯ পিপিএম (সাহসিকতা), ২০১০ সালে আইজিপি ব্যাজ, ২০১১ সালে পুলিশের সর্বোচ্চ মর্যাদাশীল পুরস্কার বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (সাহসিকতা)। সর্বশেষ বেসরকারি পর্যায়ে ২০১২ সালে সিঙ্গার-চ্যানেল আই (সাহসিকতা) পুরস্কার লাভ করেছেন বাবুল আক্তার। আর এর মধ্যে চার-চারবার অর্জন করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের সেরা সহকারী পুলিশ সুপারের মর্যাদা।
'আইকন' বাবুল আক্তারকে নিয়ে গর্ব করে বাংলাদেশ পুলিশ। ২০১২ সালের জানুয়ারিতে রাজারবাগ প্যারেড গ্রাউন্ডে তিনি পুরস্কৃত হন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার বাবুল আক্তারের জন্ম ১৯৭৫ সালে ঝিনাইদহের শৈলকুপার মদনপুর গ্রামে। বাবা আবদুল ওয়াদুদ মিয়া ও মা শাহিদা বেগম। ২০০৪ সালে মাহমুদা আক্তারের সঙ্গে সংসারজীবন শুরু করেন। দুটি সন্তান আক্তার মাহমুদ মাহির ও আক্তার তাবাচ্ছুম তানজিলা।”

… পাঠক, বাবুল আক্তার কেমন ছিলেন তার সংক্ষিপ্ত গল্পতো শুনলেন। এবার অনুধাবন করে নিন কেন তার স্ত্রী হত্যা করা হলো। যখন পুলিশ বাহিনী দুর্নীতিগ্রস্ত, যখন পুলিশ চাঁদার টাকার জন্য ফুটপাতের দোকানীকেও আগুনে পুড়িয়ে মারে, যখন পুলিশ সরকারের ঠ্যাঙারে বাহিনীতে পরিণত হয়েছে তখন বাবুল আক্তার সততা ও নিষ্ঠা সহকার পুলিশের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ব্যক্তিগত জীবনে তার পরিবারসহ ইসলামি মূল্যবোধ আলোকে জীবন যাপন করতেন আর সে কারণেই সুশানএতর চোখের কাটা হলেন এ পরিবার। বাবুল আক্তাররা থাকলে সুশান্তদের মতো সরকার দলীয় ক্যাডাররা অবাধ অপরাধ করতে পারে না। অপরাধ করে ধরা খায়। আর এ কারণেই সততাই বাবুল আক্তারের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ালো।
তবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ হত্যার আসামীদের রক্ষা করতে নতুন নাটক সাজিয়েছে। তার মতে, ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এ হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বক্তব্য সঠিক ধরে নিলেও প্রমাণ হয় যে হাসিনার পরিবার এ হত্যার সাথে জড়িত। কারণ ইহুদি সম্পৃক্ততা রয়েছে হাসিনা পরিবারের সাথে। হাসিনাপুত্র জয়ের স্ত্রী ইহুদি। 
পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে বর্বরোচিত কায়দায় খুনের মাধ্যমে শুধু একজন মা, স্ত্রী কিংবা পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারকে আক্রমণ করা হয়নি। এটি রাষ্ট্র ও নৈতিকতা বোধের উপর আক্রমণ করা হয়েছে।
বাবুল আক্তারকে টার্গেট করার আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো- তিনি সত্যিকার জঙ্গি বা সন্ত্রাসীদের উপর খড়গহস্ত ছিলেন। সরকার দলীয় জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের তিনি উপর মহলের চাপেও ছাড় দিতে চাইতেন না। সম্প্রতি আওয়ামীলীগের জঙ্গি বিরোধী অভিযানে নানা সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি প্রতিকূল পরিস্থিতে কাজ করেছেন পুলিশের এ কর্মকর্তা। জঙ্গিবিরোধী অভিযানে এ পুলিশ কর্মকর্তাকে নানাভাবে আটকানোর চেষ্টা হয়েছে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে। সব বাধা পেরিয়ে নির্ভীক এ পুলিশ কর্মকর্তা এগিয়েছেন। দেশকে জঙ্গিমুক্ত করতে না পারলে দেশকে এগিয়ে নেয়া কঠিন। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর হাটহাজারীর আমানবাজারে আওয়ামীলীগের আস্তানায় হানা দিয়ে জঙ্গিদের ব্যবহৃত বিশেষ কিছু পোশাকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন বাবুল আক্তার। ‘উপরের মহলের’ কথা বলে পরে তাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এরপর বেশ ক’দফায় পদক্ষেপ নিয়েও চট্টগ্রামে জঙ্গিবিরোধী কোনো অভিযানই করতে পারেননি তিনি। কারণটি খুঁজে বের করা দরকার। আমানবাজারের ঘটনায় নানামুখি চাপের মধ্যেও ওই জঙ্গি আস্তানায় পাওয়া আলামত ও জঙ্গিদের সঙ্গে মোবাইলে কথোপকথনের তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে কিছু ব্যক্তির নামের একটি তালিকা আইজিপিকে দিয়েছিলেন বাবুল আক্তার। এ তালিকায় কাদের নাম রয়েছে তা প্রকাশ করুক সরকার।
পদোন্নতি পেয়ে চট্টগ্রামে জঙ্গি দমন এবং চট্টগ্রামের প্রতি বিশেষ ভালাবাসার কারণে সিএমপির (ডিবি-উত্তর) পদে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করলেও বাবুল আক্তারকে ঢাকা সদরদপ্তে সংযুক্ত করা হয়। কেন এ বদলি তাও জানা দরকার। তিনি নিজ এবং পরিবার নিয়ে সব সময় সরকার দরীয় জঙ্গি আক্রমণের আশঙ্কা করতেন। তবে দেশ ও বাহিনীতে দায়িত্বরত সহকর্মীদের স্বার্থেই সেটি কখনো প্রকাশ করেন নি। সাহস থাকলে সরকার এসব তথ্য জাতির সামনে উদঘাটিত করুক।
বাবুল আক্তার বারবার বলেছেন, সব জায়গায় আমার পক্ষে হাত দেয়া সম্ভব নয়! অনেককে আমি ধরলেও রাখতে পারব না! হয়তো উপরের মহলও বিস্মিত হয়ে যাবে তাদের মুখ দেখে! 
এ পরোক্ষ উক্তির মধ্যদিয়ে বাবুল আক্তার কাদের বুঝিয়েছেন তা কী অনুধাবন করা খুব কঠিন? না কঠিন নয়। 
আজ যদি পুলিশ বাহিনীর সত ব্যক্তিরা সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ না করেন তবে বাবুল আক্তারের মতো আপনাকেও একদিন নিরবে প্রিয়তমার রক্তাক্ত ছবি দেখতে হবে।

0 Reviews:

Post Your Review