একুশে এক্সপ্রেস এর অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, মন্ত্রীর সামনে ২৮০, পেছনে ৩৫০
ভাড়া তো কমেছে। এখন কত? স্যার, চার্ট নির্ধারিত নেই। বিশ্বাস করি না। তোমাদের বিরুদ্ধে
যাত্রীদের অভিযোগ। বিআরটিএর চেয়ারম্যান কই।’
বুধবার (২৫ মে) রাজধানীর সায়েদাবাদ জনপথের মোড়ে ঢাকা-মাইজদী-সোনাপুর রুটে চলাচলকারী বাস একুশে এক্সপ্রেস কাউন্টারে কাউন্ডার ম্যানেজার এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর ওবায়দুল কাদেরের মধ্যে হয় এমন কথোপকথন।ঢাকা থেকে নোয়াখালী বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়া ২৮২ টাকা (সম্প্রতি ভাড়া কমানোর আগে) হলেও সব সময় ৩৫০ টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
বুধবার মন্ত্রীর ও বিআরটিএ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের সামনে ২৮২ টাকার স্থলে ২৮০ টাকা করে নেওয়ার কথা জানান ম্যানেজার।
মন্ত্রী কাউন্টারে প্রবেশের কয়েক মিনিট আগে সুরুজ আলী নামে চৌমুহনীর এক যাত্রীর থেকে নেওয়া হয় কথামতো ২৮০ টাকা। কিন্তু মন্ত্রী চলে যাওয়ার কয়েক মিনিট পরই আবার শুরু হয় ৩৫০ টাকা করে নেওয়া।
এদিকে, কাউন্টারে বিআরটিএ কোনো ভাড়ার চার্ট নেই। কিন্তু মন্ত্রী আসার সংবাদে কয়েক মিনিট আগে পরিবহন নেতা দাবিদার এক ব্যক্তি কাউন্টারে একটি ভাড়ার চার্ট দিয়ে যান। যা পরে ম্যানেজার মন্ত্রীকে দেখান।এ সময় ম্যানেজারকে ধমক দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যাত্রীদের অভিযোগ, তোমরা বেশি ভাড়া নাও। বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার চার্ট থেকে কত বেশি নাও স্বীকার কর। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয় টাকা কম রাখতেছ?’
জবাবে ম্যানেজার বলেন, ‘২৮০ টাকা রাখতেছি।’ পাল্টা প্রশ্নে মন্ত্রী জানতে চান, ‘আগে কত রাখতা?’ ম্যানেজার-৩৫০ টাকার কথা জানালে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কি বলে? আমি তো সব জানি।’
এ সময় মন্ত্রীর তোপ থেকে ম্যানেজারকে রক্ষায় বিআরটিএর চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভাড়া ২৮২ টাকা, ২ টাকা কম নিয়ে এখন ২৮০ টাকা রাখে।’মন্ত্রী কমেডি সুরে চেয়ারম্যানকে বলেন, ‘২ টাকা কম রাখে! এটা যাত্রীদের জিজ্ঞাসা করেছেন?’
চেয়ারম্যান এবার হিসাব দেন, ‘ কিলোমিটারপ্রতি ১ টাকা ৪৫ পয়সা ভাড়া। কমানোর ফলে ১ টাকা ৪২ পয়সা হিসেবে বর্তমানে ২৮২ টাকা আসে। ২৮০ টাকা রাখে।’
চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে মন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘বাস্তবে নিচ্ছে কিনা, সেটা তো আপনাকে দেখতে হবে।’
এদিকে, পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী চলে যাওয়া মাত্রই রফিকুল ইসলাম ও ফাতেমা খাতুন দম্পতির কাছ থেকে রাখা হয় ৩৫০ টাকা করে টিকিটের দাম।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ৩৫০ টাকা করে তাদের সন্তানসহ ৩ জনের জন্য ১ হাজার ৫০ টাকা নিয়েছে।
মন্ত্রীকে বলেছেন ২৮০ টাকা, ৩৫০ নিচ্ছেন কেন? জানতে চাইলে ম্যানেজার তাদের বলেছে, টিকিট নেই।’
এই যাত্রী বলেন, ৩৫০ টাকা করে দেওয়ার পর টিকেট দিয়েছে। মন্ত্রী শুধু কথার ফুলঝুরি নয়, বাস্তবে ব্যবস্থা নিলে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে পারতো না।
চৌমুহনীর যাত্রী সুরুজ আলী অভিযোগ করেন, ভাড়ার চার্ট চাইলে তাদের তিরস্কার করা হয়। কিন্তু মন্ত্রী যতক্ষণ থাকেন ততক্ষণই, এরপর থেকেই আবার বেশি ভাড়া নেয়।
0 Reviews:
Post Your Review