পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরীফ নিয়ে ‘ভয়ানক’ ষড়যন্ত্রের আভাস দিচ্ছেন গবেষকেরা ! - NEW WITH ALWAYES DAILY PROYJON24
SUBTOTAL :
ইসলামী পোষ্ট
পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরীফ নিয়ে ‘ভয়ানক’ ষড়যন্ত্রের আভাস দিচ্ছেন গবেষকেরা !

পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরীফ নিয়ে ‘ভয়ানক’ ষড়যন্ত্রের আভাস দিচ্ছেন গবেষকেরা !

ইসলামী পোষ্ট
Short Description:

Product Description

পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরীফ নিয়ে ভয়ানক ষড়যন্ত্র
ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ  কুরআন শরীফ নিয়ে ‘ ভয়ানক’
সব ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে আবারও । যুগে যুগে এই ষড়যন্ত্র অব্যাহত ছিলো । এবার সেই ষড়যন্ত্র নতুন করে উস্কে দিচ্ছে সম্প্রতি একটি ঘটনা  । বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকেই সন্দিহান ছিলো মুসলিম বিশ্ব । এবার সেই সন্দেহ বুঝি সত্যি হতে চলেছে । সম্প্রতি প্রভাবশালী দৈনিক দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্টে প্রকাশিত একটি ফিচার সময়ের কণ্ঠস্বরের পাঠকদের জন্য ।
চলতি বছরে  জুলাই মাসে ব্রিটেনের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু গবেষক দাবি করেন, তার‍া হাতেলেখা কুরআন শরীফের কিছু অংশের খোঁজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে করা রেডিওকার্বন পরীক্ষার পর দাবি করা হয়েছে, কোরানের পাণ্ডুলিপিটি কমপক্ষে ১ হাজার ৩৭০ বছর আগে লেখা হয়। সে হিসেবে এটি মহানবী মুহাম্মদ (সা.) যুগের বলেদাবী করেন তারা । বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে প্রায় ১০০ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের তিন হাজারের বেশি বিভিন্ন ধরনের বইপত্র ও নথির সঙ্গে ওই পাণ্ডুলিপিও সংরক্ষিত ছিল। তাদের দেয়া তথ্যমতে একজন পিএইচডি করা ছাত্র এই পান্ডুলিপি খুঁজে পান। সে সময় এই বিষয়টি বিশ্ব গনমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে ।
কিন্তু এ সংবাদ প্রকাশের পর ব্রিটেনের একদল গবেষকের গবেষণার ফল দেখলে মনে হচ্ছে এসব হয়ত  ছিলো প্রতারণায় ভরা কোন ষড়যন্ত্র । নানান আলোচনা-পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণে  এ‌ইসব গবেষকরা পবিত্র কুরআন শরীফকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন বলেই প্রমাণিত হচ্ছে  ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সংগ্রহশালার প্রধান সুসান অরওয়েল এ বিষয়ে বলেন, আসলে গবেষকদের কোনো ধারণাই ছিল না যে প্রাপ্ত অংশটি এতো পুরনো হতে পারে। গোটা পৃথিবীব্যাপী এ অংশটি খোঁজা হচ্ছিল এবং এখনও হচ্ছে। কিন্তু অংশটি যে খোদ বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়েরই গ্রন্থাগারে ছিল সেই সম্পর্কে কারো ধারণাই ছিল না। ব্রিটেনের অক্সফোর্ডি ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দাবি করেন, খুঁজে পাওয়া কুরআন শরীফের অংশ ৫৬৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৪৫ খিস্ট্রাব্দের হবে। এ থেকে আমাদের যে ধারণা আছে তার পরিবর্তন হতে পারে। আমরা জানি ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ সংকলিত। অর্থাত বিভিন্ন জনের কাছ থেকে একত্র করা।
গবেষকদের মধ্যে কুরআন শরীফের নাজিল নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। একদল মনে করছেন, ইসলাম ধর্মের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) জন্মগ্রহন করেন ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে এবং মৃত্যুবরণ করেন ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে। তাদের মতে, এর আগেই কুরআন শরীফ ছিল। অন্যদল গবেষকের মতে, এই কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। সম্প্রতি ব্রিটেনের টাইমস অব লন্ডনে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
আমরা জানি, ৬১০ খ্রিস্টাব্দের পর মহানবী (সা:) ইসলাম ধর্মের প্রচলন করেন। আর এর প্রতিষ্ঠা হয় সৌদি আরবের মদীনায় ৬২২ খ্রিস্টাব্দে। ৬১০ থেকে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মহানবী (সা:)জীবদ্দশায় কুরআন শরীফ নাজিল হয়। ৬১০ খ্রিস্টাব্দে মহানবী (সা:) এর ৪০ বছর বয়সে হিরা পর্বতের গুহায় কুরআন শরীফ নাজিল হয়। ২৩ বছর ধরে কুরআন শরীফের আয়াত আসে তার কাছে।তার অনুসারী বা সাহাবাগনকে তিনি এসব আয়াত বলতেন। তার এগুলো মুখস্ত রাখতেন। এগুলো আবার মাটির জিনিসে, উটের হাড় এবং তালপাতায় লেখা হতো। ইসলামি বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে একমত যে, মহানবী (সা:)এর আমলে পবিত্র কুরআন শরীফ বই আকারে লিখিত ছিল না। মহানবী (সা:) এর মৃত্যুর পর ৬৩৩ খ্রিস্ট‍াব্দে ইসলাম ধর্মের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (রা:) প্রথমবারের মতো মহানবী (সা:) এর অনুসারীদের কুরআন শরীফের মুখস্ত আয়াত লিখে রাখার নিদের্শ দেন।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গবেষণা লাইব্রেরির কিথ স্মল প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য টাইমসকে বলেন, কুরআনের নাজিল সংক্রান্ত যে তথ্য রয়েছে তাতে উল্লেখ আছে, এর আয়াতগুলো আল্লাহর কাছ থেকে মহানবীর কাছে এসেছে। কিন্ত আম‍াদের পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, মহানবী (সা:)‌ এর আগেও কুরআনের অস্তিত্ব ছিল। এটা আল্লাহ প্রদত্ত নয়। বরং আগে থাকা এই কুরআন শরীফকে মুহাম্মদ ‍(সা:)এবং তার অনুসারীরা রাজনৈতিক ও ধর্মীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহার করেছিলেন। এই ধারণার ফলে ইসলামের ইতিহাস নতুন করে লিখতে হতে পারে এবং ইসলাম ধর্মের মূল বিশ্বাসে চ্যালেঞ্জ আসতে পারে।
তবে এই গবেষণা ফলের তীব্র বিরোধিতা করেছেন বিখ্যাত কজন  ইসলামি গবেষক। তারা এই কার্বন পরীক্ষাকে সমর্থন করেন না। তাদের মতে, এই পবিত্র ধর্মগ্রন্থের পান্ডুলিপির পৃষ্ঠার ভাষা, ব্যাকরণ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এগুলো সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের। বর্তমানে প্রচলিত যে ধারণা আছে তার সঙ্গে সম্পূর্ণ মিল আছে এই মত।
ব্রিটেনের স্কুল অব অরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের অধ্যাপক লন্ডন স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের মোস্তফা শাহ ব্রিটেনের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেন, যদি এরকম কিছু হয় তাহলে পান্ডুলিপিটি কুরআনের উৎস সম্পর্কে ঐতিহ্যবাহী ধারণাকে সংকুচিত করবে। তবে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে রেডিওকার্বন পরীক্ষাটি কেবল পান্ডুলিপির প্রাণীর চামড়ার ওপর করা হয়েছে। পাতায় ব্যবহৃত কালির উপর নয়। যদি চামড়া এবং কালির রেডিওকার্বন পরীক্ষার ফলাফল একই হয় তাহলে বলা যায়, বার্মিংহামে প্রাপ্ত প্রাচীন পান্ডুলিপিটি ইসলাম ধর্মের প্রবর্তনের আগের।
আল-ফুরকান ইসলামিক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আব্বাস তাসখান্দি বলেন, চামড়া পুরানো হতে পারে। লেখা নতুন। উল্লেখ্য, মহানবী(সা.) এর মৃত্যুর পরে ৬৫০ খ্রীষ্টাব্দে ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমান(রা.)এর সময়কালে পবিত্র কোরআন শরীফ গ্রন্থাকারে সংকলিত হয়।এর আগে আরবের ঐতিহ্য অনুযায়ী, নবীর অনুসারীরা আয়াতগুলোকে মুখস্থ করে রেখেছিলেন। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাপ্ত পান্ডুলিপিটি ভেড়ার কিংবা ছাগলের চামড়ায় লিখা হয়েছিলো। এদিকে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্রীস্টান এবং ইসলাম বিষয়ক প্রফেসর ডেভিড থমাস জানান, যে প্রাণী থেকে প্রাচীনতম পান্ডুলিপির চামড়াটি পাওয়া গেছে সেটি ৫৬৮ থেকে ৬৪৫ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময় বেঁচে ছিলো। ধারণা করা হচ্ছে কেবলমাত্র পান্ডুলিপিটি তৈরির জন্যই প্রাণীটিকে হত্যা করা হয়েছে। তবে ডেভিড থমাস বলেন, বিষয়টি নিয়ে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পরিকল্পনা করছেন তারা।
দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট অবলম্বনে,
ভাষান্তর : এসএম মুস্তাফিজুর রহমান
লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।

0 Reviews:

Post Your Review