ডিজিজেস' জার্নাল প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছে। সেখানে এইচআইভি প্রতিরোধী একটি ওষুধকে শতভাগ কার্যকর বলে মন্তব্য করা হয়েছে। 'প্রিএক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস (পিআরইপি) নামের বিতর্কিত ওষুধটিকেই নিশ্চিত সমাধান বলে মত দিলেন গবেষকরা। ৬৫৭ জন মানুষ টানা আড়াই বছর ধরে এই ওষুধ খাওয়ার ফলে তাদের এইচআইভি'র সংক্রমণ ঘটেনি বলে জানানো হয়েছে গবেষণায়।
২০১২ সালে আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ বিভাগ নির্দিষ্ট এক ডোজ ওষুধকে নিরাপদ ও কার্যকর বলে অনুমোদন দেয়। মূলত এমট্রিসিটাবিন এবং টেনোফোভি রোগের জন্যে এ ওষুধ বাজারে ছাড়া হয়। তবে যারা এইচআইভি-তে আক্রান্ত নন, কিন্তু সম্ভাবনা রয়েছে তাদের জন্যেই এই ওষুধ। অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলো 'ট্রুভাডা' ব্র্যান্ড নামের অধীনে বিক্রি হতে থাকে। অনিরাপদ যৌনতা বা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে যাদের দেহে এইচআইভি সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে, তাদের নিরপত্তা দেয় ওষুধটি।
আমেরিকার কাইজার পারমানেনটি সান ফ্রান্সিসকো মেডিক্যাল সেন্টারের এপিডেমিওলজিস্ট এবং প্রধান গবেষক জোনাথন ভল্ক বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা দেখতে চেয়েছি যে, এইচআইভি ছড়ানোর অতি ঝুঁকিপূর্ণ কাজের পরিবেশে আক্রান্ত হওয়ার পর পিআরইপি সত্যিকার অর্থেই একে প্রতিরোধ করে কি না। পরীক্ষায় এ ওষুধের কার্যকারিতা শতভাগ প্রমাণিত হয়েছে। এর আগের অন্যান্য গবেষণায় ওষুধটির কার্যকারিতা ৮৬ শতাংশ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
তবে সমালোচকদের মতে, প্রতিদিন এই পিল খাওয়ার মাধ্যমে মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ যৌনতায় উৎসাহ বাড়বে। কিন্তু গ্রহণকারীদের বিশাল একটি অংশ এ ওষুধটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই পিল সেবনের মাধ্যমে গোটা বিশ্বে ৪ কোটি মানুষ ভবিষ্যতে এইচআইভি'র সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকতে পারবেন। বিশেষ করে যারা কনডম প্রাপ্তির সুবিধা থেকে বঞ্চিত তাদের জন্যে পিলটি একমাত্র সমাধান বলে মত দিয়েছে গবেষক দল।
কাইজার সেন্টারের এইচআইভি কেয়ার অ্যান্ড প্রিভেনশন বিভাগের প্রধান ব্র্যাডলে হারে জানান, যারা প্রতিরোধক ব্যবস্থার জন্যে ট্রুভাডা খাবেন, তাদের নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধাতে থাকতে হবে।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা এতে যুক্ত না থাকলেও গবেষণা প্রতিবেদনটাকে 'এর চেয়ে ভালো খবর আর হয় না' বলে মন্তব্য করেছেন। মানব জাতি হয়তো ওষুধটির মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণের হাত থেকে বেঁচে যেতে পারে। সূত্র : ফক্স নিউজ
0 Reviews:
Post Your Review