আপনার সন্তানকে বুঝতে শিখুন - NEW WITH ALWAYES DAILY PROYJON24
SUBTOTAL :
স্বাস্থ্য তথ্য
আপনার সন্তানকে বুঝতে শিখুন

আপনার সন্তানকে বুঝতে শিখুন

স্বাস্থ্য তথ্য
Short Description:

Product Description

মা-বাবারা সব সময় সন্তানের
মঙ্গল কামনা করেন। কিন্তু কেবল মঙ্গল কামনাই যথেষ্ট নয়। সন্তানের ভালো চাইলে সবার আগে তার মনটিকে পড়তে হবে। আপনি আপনার মতো করে সন্তানের ভালো চাইলে ফলাফল সব সময় ইতিবাচক হবে না, শিশুকে বুঝে তার ভালো চাইতে হবে। এটি অনেকটা সেই বানর আর মাছের গল্পের মতো। একটি দ্বীপে বাস করত একটি বানর। পাশের পানির একটি রঙিন মাছের সঙ্গে তার খুব বন্ধুত্ব। বানর মাছের মঙ্গল চায়, মাছও বানরকে ভালোবাসে। একদিন শুরু হলো প্রচণ্ড ঝড় আর বৃষ্টি। ঝড়ের হাত থেকে বাঁচতে বানর একটি উঁচু গাছের কোটরে আশ্রয় নিল। আর বৃষ্টির পানি পেয়ে মাছটা খুশিতে লাফাতে লাগল। গাছ থেকে মাছের এই লাফালাফি দেখে বানর ভাবল, মাছটা বোধ হয় পানি থেকে উঠে বাঁচতে চাইছে। বানরটি ঝড়ের ভেতর নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাছ থেকে নেমে এসে পানি থেকে মাছটিকে কোলে নিয়ে গাছের কোটরে শুকনো পাতা দিয়ে ঢেকে রাখল। মাছটা কতক্ষণ লেজ ঝাপটাল। বানর তখন ভাবল, মাছটা তাকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে। এভাবে লেজ ঝাপটাতে ঝাপটাতে মাছটা একসময় নিথর হয়ে গেল!
এই গল্পে মাছের প্রতি বানরের মঙ্গল কামনা আর ভালোবাসার কোনো কমতি ছিল না, কিন্তু সে মাছের বৈশিষ্ট্য আর মন বুঝতে না পারার কারণে শেষ পর্যন্ত ভালো না হয়ে খারাপই হলো। ঠিক তেমনিভাবে প্রতিটি শিশুর বৈশিষ্ট্য আর মনকে বুঝতে না পারলে তার জন্য ভালো কিছু করা সম্ভব নয়। শিশু কী চায় আর কী চায় না, সেটি বুঝতে হবে। এটি চর্চার বিষয়—একদিনে সন্তানের সবকিছু বুঝে ফেলা সম্ভব নয়। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা মনোবিজ্ঞানী না হয়েও বাবা-মায়েরা ইচ্ছা করলেই বেশির ভাগ সময় সন্তানকে বুঝতে পারবেন, যদি তাঁরা সন্তানকে গুণগত সময় দেন আর তার আচরণকে লক্ষ করেন। এ জন্য যা যা করা যেতে পারে—
  • শিশু যখন খেলে, খায় এমনকি ঘুমায়, তখন তাকে লক্ষ করুন। কোন বিষয় বা বস্তু তাকে এই কাজগুলো করার সময় মনোযোগ বাড়াচ্ছে বা কমাচ্ছে, সেদিকে নজর দিন।
  • আপনার শিশুর সঙ্গে দরকারে-অদরকারে কথা বলুন। তার কথা বলার ভঙ্গি, গলার স্বরের ওঠানামা, চোখের ভাষা অনুভব করুন। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে মুখের ভাষার চেয়ে তাদের শারীরিক ভাষার (ননভারবাল ল্যাঙ্গুয়েজ) দিকে বেশি গুরুত্ব দিন।
  • গবেষণায় দেখা গেছে, তিন থেকে চার বছরের বয়সের দিকে শিশুরা তাদের চোখের মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে সক্ষম হয়। তাদের চোখের দৃষ্টি, অক্ষিগোলকের নড়াচড়া ইত্যাদির মাধ্যমে তারা তাদের চাওয়া-পাওয়া বোঝাতে পারে। বাবা-মায়েরা যদি নিবিড়ভাবে এ সময় শিশুর প্রতি নজর দেন, তবে তাদের মনের ভাব বুঝতে পারবেন।
  • শিশুর কথা মন দিয়ে শুনুন। কথা শোনার সময় তার চোখের দিকে তাকান। কোনো শব্দ বা বাক্য বলার সময় তার মুখভঙ্গির পরিবর্তন হচ্ছে, সেদিকে লক্ষ করুন, সেই শব্দ বা বাক্যটির গুরুত্ব বুঝতে শিখুন।
  • শিশুকে একান্ত সময় দিন। সে আলাদা করে আপনাকে কিছু বলতে চায় কি না, সেটি বোঝার চেষ্টা করুন।
  • যত দূর সম্ভব তার বয়সে ফিরে গিয়ে তার কল্পনার জগৎকে অনুভব করতে চেষ্টা করুন। তার আঁকা ছবি, খাতার আঁকিবুঁকি, তার বানানো খেলনা, তার বলা ছড়া—সবকিছুকে ভালোভাবে লক্ষ করুন। দেখা যাবে তার আঁকা একটি ছবি থেকেই আপনি তার মনের অনেকখানি বুঝে ফেলেছেন।
  • কোনো কোনো সময় শিশুকে অনুসরণ বা অনুকরণ করার চেষ্টা করুন, এর মাধ্যমে তার মনের ভেতরে প্রবেশ করাটা সহজ হতে পারে।
  • শিশুর কোনো প্রশ্ন এড়িয়ে যাবেন না, তা যতই বিব্রতকর হোক না কেন। তার বয়সের উপযোগী করে বিজ্ঞানসম্মতভাবে সেটির উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন। তার প্রশ্নের ভেতরও লুকিয়ে থাকতে পারে তার চাওয়া না চাওয়া।
  • শিশুর সঙ্গে হুটোপুটি করে খেলুন, হাসুন, দৌড়ান। তার আবেগকে প্রকাশ করার সুযোগ দিন।
  • আশপাশের কিছুর কারণে শিশুর মধ্যে আচরণের পরিবর্তন হচ্ছে কি না, সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। কাদের সামনে গেলে শিশু ভয়ার্ত হয় আর কাদের সামনে গেলে তার মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, সেটি নির্ধারণ করুন।
  • একটি জিনিস মনে রাখবেন, আপনি যেমন আপনার শিশুর মন বুঝতে চাইছেন, শিশুও তেমনি আপনার মন বুঝতে চাইছে এবং আশ্চর্য হলেও সত্যি যে সে আপনার চেয়ে এ বিষয়ে অনেক বেশি দক্ষ! তাই নিজের কথা, আচরণ, চোখের ইশারাকে শিশুবান্ধব রাখুন। বাবা-মা, শিশুর প্রতি কোনো কারণে রূঢ়, বিরক্ত, সন্দিহান হলে সে কিন্তু ঠিকই বুঝতে পারবে, যতই তারা তা ঢেকে রাখার চেষ্টা করুক না কেন।

0 Reviews:

Post Your Review